বায়ু দূষণ কাকে বলে? বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার

5/5 - (1 vote)

বিশুদ্ধ বায়ু আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। সত্যি বলতে শুধুমাত্র আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, বরং পরিবেশের সঠিক ভারসাম্য রক্ষার জন্যেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি এত বেশি খারাপ যে– বিশুদ্ধ বায়ুর সংকর দেখা দিচ্ছে। মানে অতিরিক্ত হারে বায়ু দূষণ জনিত সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আমাদের জীবকুল-প্রাণীকুল উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। 

তাই আমাদের আজকের আর্টিকেল আমরা বায়ু দূষণ কাকে বলে, বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার, সেইসাথে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আসুন আমাদের এই পরিবেশ রক্ষার্থে, নিজেদের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবনের তাগিদে বায়ু দূষণের কারণ এবং প্রতিকার গুলো জেনে সঙ্গে সঙ্গে কার্যকরী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করি। এই পরিবেশ আমার, আপনার, আমাদের সকলের। তাই নিজ নিজ দায়িত্বে বায়ু দূষণ রক্ষার্থে এগিয়ে আসা জরুরি। 

বায়ু দূষণ কাকে বলে

বায়ু দূষণ কাকে বলে, বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার, বায়ু দূষণের কারণ, বায়ু দূষণের প্রতিকার,

বায়ু দূষণ হচ্ছে বায়ুমন্ডলের মধ্যে ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি, যা পরিবেশ এবং মানুষের স্বাস্থ্য উভয়কে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে অর্থাৎ যখন বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি বেড়ে যায় তখন তাকে বায়ু দূষণ বলে। 

আমরা জানি– বায়ুমন্ডলে মূল উপাদান হিসেবে অবস্থান করে ৭৮.০৯% নাইট্রোজেন, ২০.৯৫% অক্সিজেন, ০.০৩% কার্বন ডাই অক্সাইড, ও ০.৯৩% নিষ্ক্রিয় গ্যাস। পাশাপাশি অন্যান্য গ্যাস রয়েছে খুবই সামান্য পরিমাণে। এছাড়াও অল্প পরিমাণে আরো রয়েছে হাইড্রোজেন, কার্বন মনোঅক্সাইড, হিলিয়াম, মিথেন, নিয়ন এবং জলীয় বাষ্প।

এই উপাদানগুলো যখন স্বাভাবিক মাত্রায় বায়ুমন্ডলে অবস্থান করে তখন মূলত পরিবেশ বা প্রকৃতির জীবের কোন ধরনের ক্ষতি হয় না। কিন্তু যখন বায়ু দূষণের কারণে অর্থাৎ এই ধরনের উপাদানের সাথে ক্ষতিকর পদার্থগুলো অতিরিক্ত মাত্রায় মিশে যায় তখন বায়ু তার প্রয়োজনীয় স্বাভাবিক কার্যাবলি চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়, ফলে দেখা দেয় নানাবিদ সমস্যা।

বায়ু দূষণের সংজ্ঞা 

বিশেষ করে বায়ু দূষণের ফলে মানুষ ও অন্যান্য জীবের স্বাস্থ্যের অতিরিক্ত ক্ষতি হয়ে থাকে। বলা হয়– বায়ু দূষণ মূলত রাসায়নিক ক্রিয়া-কলাপ শারীরিক বা জৈব মাধ্যম দ্বারা গঠিত ভেতরের বাহিরের পরিবেশের এক প্রকার দূষণ, যেটা বায়ুমণ্ডলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য গুলোকে খুব সহজেই পরিবর্তন করে দেয়। 

যাইহোক, আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় বায়ু দূষণের সংজ্ঞা দাও বা বায়ু দূষণ কাকে বলে তা লিখ, তাহলে এর প্রতি-উত্তরে আপনি যেভাবে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় বায়ু দূষণের সংজ্ঞা উল্লেখ করবেন সেগুলো হলো–

  • বায়ুর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাস, ধূলিকণা রাসায়নিক পদার্থ বা জীবাণু মিশ্রিত হলে তাকে বায়ুদূষণ বলে। 
  • বায়ুতে এমন কোন পদার্থের উপস্থিতি, যা মানুষের স্বাস্থ্য এবং জীবনের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন বায়ুর অবস্থানকেই বায়ু দূষণ বলে। 
  • বায়ুর গুণগত মানে যদি এমন পরিবর্তন ঘটে, যা প্রাকৃতিক পরিবেশ বা জীব বৈচিত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে তখন তাকে বায়ু দূষণ বলে। 
  • বায়ুর উপাদান গুলির প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হলে তখন তাকে বায়ুদূষণ বলে। 
  • বায়ুতে এমন গন্ধ বা ধোয়া, যা স্বাভাবিক নয় এবং যেটা জীব এবং মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বাধা সৃষ্টি করছে তখন এই দূষিত বায়ুকেও বায়ু দূষণ বলে।

এখন আসুন জেনে নেই– বায়ু দূষণের প্রকারভেদ অর্থাৎ বায়ুদূষণ কত প্রকার ও কি কি সে নিয়ে খুঁটিনাটি। পাশাপাশি এ পর্যায়ে আমরা বায়ু দূষণ করতে পারে এমন বিভিন্ন ধরনের বায়ু দূষক এর নাম উল্লেখ করব। তবে আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে আরো করতে পারেন– পরিবেশ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি এ সম্পর্কিত আরেকটি আর্টিকেল। 

বায়ু দূষণের প্রকারভেদ

বায়ু দূষণ প্রধানত দুই প্রকার। যথা –

  • প্রাকৃতিক বায়ু দূষণ
  • মানবসৃষ্ট বায়ু দূষণ। 

এছাড়াও বায়ু দূষণকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যখন আপনি বায়ু দূষণের প্রধান কারণ গুলো সম্পর্কে জানবেন তখন এই বিষয়টি আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। তাই নিচের অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

বায়ু দূষণের কারণ 

বায়ু দূষণ কাকে বলে, বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার, বায়ু দূষণের কারণ, বায়ু দূষণের প্রতিকার,

বায়ু দূষণের নানাবিধ কারণ রয়েছে। মূলত প্রাকৃতিক কারণে বায়ু দূষণ ঘটে আবার মানুষের কিছু কর্মকাণ্ডের কারণে বায়ু দূষণ ঘটে। যাই হোক– ইতিমধ্যে আমরা উল্লেখ করেছি বিভিন্ন ধরনের বায়ু দূষক পদার্থ রয়েছে। কিন্তু সেগুলো কি কি যেগুলো আমাদের বায়ুমন্ডলে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করতে পারে! মূলত ঐ সকল শক্তিশালী কিছু বায়ুদূষক হচ্ছে–

  • অ্যামোনিয়া 
  • নাইট্রাস অক্সাইড 
  • কার্বন মনে অক্সাইড 
  • সালফার ডাই অক্সাইড 
  • কার্বন ডাই অক্সাইড 
  • মিথেন এবং 
  • ক্লোরোফ্লোরোকার্বন।

যেগুলো অতিমাত্রায় বেড়ে গেলে প্রাকৃতিক কারণে বায়ু দূষিত হয়ে যায় অর্থাৎ এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী বায়ু থাকে না। যা আমাদের নানাবিধ ক্ষতি করে। এছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে বায়ু দূষণের আরো কিছু কারণ হলো–

  • আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত 
  • বন জঙ্গলে আগুন 
  • প্রাকৃতিক ধূলিঝড় সহ-প্রভৃতি। 

অন্যদিকে বায়ু দূষণের মানব সৃষ্ট অন্যতম প্রধান কারণ গুলো হলো–

  • অতিরিক্ত গাছপালা কেটে ফেলা 
  • প্রচুর পরিমাণে দালান কোঠা বা শিল্প কারখানার নির্মাণ
  • শিল্প ও কলকারখানা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া 
  • যানবাহনের ধোঁয়া 
  • পলিথিন বা ক্ষতিকর বর্জ্য পদার্থ পুড়িয়ে ফেলার ধোয়া সহ প্রভৃতি। 

বায়ু দূষণের উৎস ও তার বর্ণনা 

বায়ুমণ্ডলের বিশুদ্ধ বায়ু নৃতাত্ত্বিক উৎস থেকে দূষিত হয় অর্থাৎ মানবসৃষ্ট উৎস থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে দূষিত হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রাকৃতিক কিছু কারণেও দূষিত হয় যেগুলো আমরা ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছি। তবে মাঝেমধ্যেই একাডেমিক প্রশ্ন হিসেবে করা হয়ে থাকে– বায়ু দূষণের উৎস ও সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা কর। তো সে ক্ষেত্রে যদি আপনি সাজিয়ে গুছিয়ে অ্যানসার করতে চান সেক্ষেত্রে লিখতে পারেন। 

মানবসৃষ্ট অর্থাৎ নৃতাত্বিক উৎস থেকে বায়ু দূষিত হওয়ার কারণ বেশিরভাগই জ্বালানি পোড়ানোর সাথে সম্পর্কিত। যেমন–  স্থির উৎসের মধ্যে রয়েছে:

  • জীবাশ্ম জ্বালানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বায়োমাস পাওয়ার প্লান্ট থেকে উৎপদিত কালো ধোয়া
  • তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র থেকে মিথেন গ্যাস এর উৎপত্তি 
  • কাঠ, ফসলের বর্জ্য, গোবরের মতো প্রথাগত বায় মাস পোড়ানো থেকে উৎপাদিত কালো ধোঁয়া 
  • কলকারখানার বর্জ্য জ্বালানির ধোঁয়া
  • নিয়ন্ত্রিত আগুন ব্যবহার করে কৃষি ও বনব্যবস্থাপনার কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে অতিরিক্ত কালোধোয়ার সৃষ্টিসহ প্রভৃতি। 

অন্য দিকে জ্বালানি পোড়ানো অর্থাৎ দহনজনিত কারণ ছাড়া মানব সৃষ্ট আর যে সকল কারণে বায়ু দূষণ ঘটে সেগুলো হলো–

  • রং, চুলের স্প্রে, এরোসল স্প্রে এবং অন্যান্য দ্রাবক থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া
  • ভাগার গুলোতে জমা বর্জ্য থেকে উৎপন্ন মিথেন গ্যাস
  • পারমাণবিক অস্ত্র, বিষাক্ত গ্যাস অথবা রকেট জাতীয় সামরিক সম্পদ গুলোর অতিরিক্ত উৎপত্তি ও সে গুলোর ব্যবহার এবং 
  • আবাদি কৃষি জমিতে নাইট্রোজেন অক্সাইড এর প্রয়োগ অথবা কৃষিজাত নির্গমন বায়ু দূষণের আরেকটি কারণ। 
  • এছাড়াও অন্যতম আরেকটি কারণ হলো বাসস্থান তৈরির তাগিদে অতিরিক্ত পরিমাণে বন জঙ্গল ধ্বংস এবং বড় বড় গাছ কেটে ফেলা।

তো পাঠক বন্ধুরা, বায়ু দূষণ কি,বায়ু দূষণ কাকে বলে এবং বায়ু দূষণের কারণগুলো নিয়ে আমরা যে তথ্যগুলো তুলে ধরেছি আশা করছি এগুলো আপনার কাজে আসবে। তো এখন আসুন জেনে নেই বায়ু দূষণের প্রভাবে সাধারণত কি কি ক্ষতি হয়। আর কেনই বা আমরা এই বায়ু দূষণকে প্রতিরোধের জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়। 

বায়ু দূষণের প্রভাব

বায়ু দূষণ কাকে বলে, বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার, বায়ু দূষণের কারণ, বায়ু দূষণের প্রতিকার, বায়ু দূষণের প্রভাব,

বায়ু দূষণের ফলে অত্যন্ত বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এটি মূলত মানব জীবনের অন্যতম একটি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, সেইসাথে জীবকুলের অর্থাৎ প্রকৃতির ওপরও খারাপ প্রভাব বিস্তার করে। এজন্য আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা বায়ু দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব এবং পরিবেশগত প্রভাব, অর্থনৈতিক ক্ষতি ও প্রাণিজগতের ওপর প্রভাব আলাদা আলাদা ভাবে সংক্ষেপে বর্ণনা করব। যেগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা আমাদের প্রত্যেকেরই জরুরী।

বায়ু দূষণের কারণে স্বাস্থ্যগত প্রভাব 

  • বায়ু দূষণের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যের উপর সবচেয়ে বাজে প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে– শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা যেমন এজমা, ব্রংকাইটি, হাঁপানি, হার্টের রোগ অথবা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, চোখের সমস্যা কিংবা ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়ার মতো অসুস্থতা দেখা দেয়। 

বায়ু দূষণের কারণে পরিবেশগত প্রভাব 

  • অতিরিক্ত পরিমাণে বায়ু দূষণ হলে বেড়ে যায় অ্যাসিড বৃষ্টি। যে বৃষ্টি আমাদের প্রকৃতি এবং প্রাণীকুলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়াও বায়ু দূষণ জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটায় ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সৃষ্টি হয় এমনকি ওজন স্তরের ক্ষতি করে থাকে। ফলে তেজস্ক্রিয় রশ্নির পরিমাণ বেড়ে যায়, যেটা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ক্ষতিকর মহামারী রোগের সৃষ্টি করতে পারে। 

বায়ু দূষণের ফলে প্রাণী জগতের উপর প্রভাব 

  • দূষিত বায়ু সর্বদা বন্যপ্রাণীর স্বার্থের ওপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে প্রজনন ক্ষমতা কমে যায়, বন্যপ্রাণীদের মধ্যে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় এমনকি অতিরিক্ত মৃত্য ঘটার ফলে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত প্রায় হয়ে যায় এমন অনেক প্রাণী। পাশাপাশি পানিতে বসবাসকৃত জীবের ক্ষতি করে বায়ু দূষণ। কেননা বায়ু দূষণের ফলে যে এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি হয় সেটা প্রাণীদের জন্য প্রাণহানি বয়ে নিয়ে আসে। 

বায়ু দূষণের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রভাব 

  • স্বাভাবিকভাবে যখন বায়ু দূষণ মানুষের উপর প্রাণীকুলের ওপর এবং প্রকৃতির ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে অর্থাৎ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে তখন আমাদের অর্থনৈতিক ভারসাম্যতা বজায় রাখা সম্ভব হবে না এটাই স্বাভাবিক। কেননা বায়ু দূষণের ফলে কৃষিও হুমকির মুখে পড়ে আবার স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। 

তো এখন প্রশ্ন হলো – কিভাবে এই বায়ু দূষণের কারণ গুলো জানার পর এটার প্রতিকার করা সম্ভব। জেনে নিন বায়ু দূষণে আমি বা আপনি কিভাবে প্রতিকার এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে পারি।

বায়ু দূষণ প্রতিকারের উপায়

বায়ু দূষণ কাকে বলে, বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার, বায়ু দূষণের কারণ, বায়ু দূষণের প্রতিকার,

খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি বায়ু দূষণ প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে চাই সে ক্ষেত্রে–

  • জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে 
  • জনগণের মাঝে বায়ু দূষণের কারণ এবং বায়ু দূষণের প্রভাব জানানোর পদক্ষেপ নিতে হবে 
  • বায়ু দূষণ সমস্যার মোকাবেলার জন্য পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে সকলকেই 
  • বায়ু দূষণ রোধে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে বায়ু দূষণ রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে 
  • বায়ু দূষণ সম্পর্কিত প্রচলিত ভুল ধারণা দূর করতে হবে সকলের মন থেকে 
  • বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে 
  • প্রত্যক্ষ ব্যবস্থা হিসেবে নিতে হবে কলকারখানাগুলো শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া, উন্নত জ্বালানি ব্যবহার করা, যানজটের সমস্যার সমাধান এবং পরিকল্পিতভাবে কারখানা গুলো থেকে উৎপাদিত কালো ধোয়া শোধন করার মাধ্যমে ক্ষতিকর মাত্রা কমিয়ে নিয়ে আসা। 
  • এছাড়াও গাছপালা লাগানোর ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে পরিবার গ্রাম, ও দেশের মানুষকে। 

ব্যাস, এভাবে যদি আমরা নিজ নিজ এলাকা, নিজ নিজ জেলা এবং নিজ নিজ দেশের মানুষের মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারি এবং আমরা নিজেরা সচেতন হই তাহলে ধীরে ধীরে বায়ু দূষণ প্রতিকার করা সম্ভব। 

📌 আরো পড়ুন 👇

বায়ু দূষণের কারণ ও প্রতিকার

ইতোমধ্যে আমরা বায়ু দূষণের কারণগুলো জেনেছি। যেগুলোর মধ্যে মানব সৃষ্ট কারণ হচ্ছে কলকারখানার অতিরিক্ত ধোঁয়া সৃষ্টি এবং মানুষের করা বিভিন্ন কর্মকান্ড। তাই আমরা যদি বায়ু দূষণ ঠেকাতে চাই সেক্ষেত্রে–

  • অতিরিক্ত জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে
  • এমন জিনিস পুরানো থেকে বিরত থাকতে হবে যেগুলো অতিমাত্রায় দূষক পদার্থ উৎপাদন করে। যেমন– কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস।
  • গাছপালা সব সময় আমাদের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস কার্বন ডাই অক্সাইড নিজেরা শোষণ করে, ফলে এটা বায়ু দূষণ প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই বায়ু দূষণ ঠেকাতে গাছপালা কাঁটা বন্ধ করতে হবে পাশাপাশি
  • বন জঙ্গল ধ্বংস করা এড়িয়ে চলতে হবে।

কিন্তু কথা হচ্ছে, আমরা কিভাবে এই বায়ু দূষণ প্রতিরোধের জন্য প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব?

বায়ু দূষণ সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর

বায়ু দূষণের ১০ টি কারণ কি কি?

বায়ু দূষণের দশটি কারণ হলো: কলকারখানার কালো ধোঁয়া, অতিরিক্ত গাছপালা কেটে ফেলা, অতিমাত্রায় জ্বালানি তেলের ব্যবহার, কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি, যানবাহনের ধোঁয়া, গৃহস্থালী জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো, কৃষিকাজে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, বন জঙ্গলে আগুন এবং প্রাকৃতিক ঝড় অথবা প্রাকৃতিক অন্যান্য ঘটনা। 

কোনটি বায়ু দূষণের প্রধান প্রাকৃতিক কারণ?

বায়ু দূষণের প্রাকৃতিক কারণ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রধান কারণ হচ্ছে আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত। এছাড়াও আরো রয়েছে বন জঙ্গলে হঠাৎ আগুন লেগে যাওয়া কিংবা প্রাকৃতিক ঝড়। 

কোন দেশের বায়ু দূষণ সবচেয়ে বেশি?

চীনের কিছু বড় শহর এবং ভারতের কিছু শহরে বায়ু দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে অতিরিক্ত পরিমাণে গাছ কাটা করছে যে কারণে এখানেও বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে অতিমাত্রায়। 

গাছ লাগানো বায়ু দূষণ কমাতে সাহায্য করতে পারে?

হ্যাঁ অবশ্যই, গাছ লাগানোর মাধ্যমে বায়ু দূষণ প্রতিরোধ করা যায়। কেননা সবুজ গাছপালা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার সময় কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে আমাদের জন্য শর্করা জাতীয় খাদ্য তৈরি করে সে সাথে অক্সিজেন উৎপাদন করে। তাই বায়ুর গুণমান উন্নত করতে অতিরিক্ত গাছ লাগানোর কোন বিকল্প নেই। 

বায়ু দূষণ সম্পর্কে আমাদের মতামত

যেহেতু বায়ু আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যবহার্য উপাদান আর এই বায়ু দূষণের সমস্যা বিশ্বব্যাপী তৈরিকৃত একটি সমস্যা, তাই আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

তাই আসুন আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক হই, বায়ু দূষণ প্রতিরোধে অতিরিক্ত পরিমাণে গাছ লাগাই এবং বায়ু দূষণের কারণ গুলো তৈরি করার পরিবর্তে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।

বায়ু দূষণ সম্পর্কে আপনাদের আর কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানান। এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন আরো শিক্ষামূলক আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

Sharing is Caring

Leave a Comment