শিল্প কাকে বলে? শিল্প কত প্রকার ও কি কি

5/5 - (1 vote)

শিল্প হলো এমন একটি বিষয় যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে অত্যন্ত প্রভাবিত করে। যে দেশের শিল্প খাত যত উন্নত, সেই দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান তত উন্নয়নশীল। তাই শিল্প সম্পর্কে জ্ঞান রাখা আবশ্যক। 

পাশাপাশি, শিল্প কাকে বলে তা জানার সাথে সাথে শিল্প কত প্রকার ও কি কি সম্পর্কে ধারণা থাকলে আমাদের কোন খাতে কেমন বিনিয়োগ প্রয়োজন এবং কোন শিল্পে কতটা উন্নতি প্রয়োজন তা সম্পর্কে বিস্তর ধারণা পাওয়া যায়। তাহলে আসুন শিল্প সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেয়া যাক।

শিল্প কাকে বলে

শিল্প কাকে বলে, শিল্প কত প্রকার ও কি কি

“শিল্প” শব্দটি আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিল্প বলতে মূলত অর্থনৈতিক একটি ধারণাকে বোঝায়। আরও পরিষ্কারভাবে বলতে চাইলে, শিল্প হলো কোনো দ্রব্যের রূপান্তর প্রক্রিয়া যা ঐ দ্রব্যটির মূল্য বাড়িয়ে দেয়। 

শিল্পের সংজ্ঞা যদি আমরা দিতে চাই তবে তা হলো, কোনো কাঁচামাল বা প্রাথমিক দ্রব্যকে বিভিন্ন মেশিনের সাহায্য বা হস্তচালিত কোনো উপায়ে প্রক্রিয়াকরণ করার মাধ্যমে মাধ্যমিক বা চূড়ান্ত দ্রব্য উৎপাদন করার প্রক্রিয়াই হলো শিল্প যেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।

শিল্প আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত। আমরা যেসকল জিনিস ব্যবহার করি তার সবকিছুই কোনো না কোনো শিল্পের অন্তর্ভুক্ত কেননা তা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হয়।

শিল্প কত প্রকার ও কি কি

শিল্প সম্পর্কিত প্রাথমিক ধারণা তো আমরা পেয়ে গেছি। এবার জানা প্রয়োজন শিল্প কত প্রকার ও কি কি। নিম্নে শিল্পের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

মৌলিক শ্রেণিবিভাগ 

শিল্পকে আমরা প্রথম পর্যায়ে দুইটি বিষয়ের প্রেক্ষিতে ভাগ করতে পারি যার মধ্যে একটি হলো মৌলিক শ্রেণিবিভাগ। তবে মৌলিক শ্রেণিবিভাগ আবার দুটি ভাগের সৃষ্টি করে। এগুলো হলো-

  • প্রাথমিক শিল্প
  • দ্বিতীয় স্তরের শিল্প

এবার এদের সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নেয়া যাক।

প্রাথমিক শিল্প

শিল্প কাকে বলে, শিল্প কত প্রকার ও কি কি

প্রাথমিক শিল্প বলতে সেই সকল জিনিসকে বোঝায় যা মূলত প্রকৃতি প্রদত্ত। অর্থাৎ এসকল কাঁচামাল সরাসরি প্রকৃতি থেকেই আহরণ করা যায় এবং সেগুলোকে মানুষের ব্যবহারের জন্য পৌঁছে দেয়া যায়। তাই এ ধরণের শিল্পের অন্তর্গত সবকিছুই প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত বলে বিবেচিত হয়। প্রাথমিক শিল্পের মধ্যে তিন ধরণের ভাগ পরিলক্ষিত হয়-

১. কৃষি শিল্প 

প্রাথমিক শিল্পের মধ্যে প্রথমটি হলো কৃষি শিল্প। কৃষিজ কোনো পণ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি করতে হয়না। বরং এসকল শিল্পের অন্তর্গত জিনিসসমূহ পরিপূর্ণ পরিচর্যা এবং সঠিকভাবে উৎপাদনের মাধ্যমে প্রকৃতি থেকেই পাওয়া যায়। এ শিল্পের অন্তর্গত হলো- ধান, গম, তুলা, পাট, চা ইত্যাদি।

২. প্রজনন শিল্প

কৃষি শিল্পের পর আমরা জানব প্রজনন শিল্প নিয়ে। এই শিল্পে কোনো নির্দিষ্ট জীবের ব্যবহার বৃদ্ধির চাহিদার কারণে তাকে নিবিড়ভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে বংশ এবং পরিমাণে বাড়ানো হয়। 

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, রেশম পোকার গুটি থেকে রেশম উৎপন্ন হয় যা বস্ত্র কারখানার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। একারণেই রেশম পোকার প্রজনন শিল্পের মাধ্যমে এ পোকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। এটাই প্রজনন শিল্প।

৩. নিষ্কাশন শিল্প

এর পরবর্তী হলো নিষ্কাশন শিল্প। এর সাথে মূলত খনিজ পদার্থের জ্ঞান জড়িত। প্রকৃতিতে বিভিন্ন খনিজের আকরিক হয়েছে। এসকল খনিজ পদার্থ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। তাই প্রকৃতি থেকে আমরা এই খনিজ সংগ্রহ করি। এটাই হলো নিষ্কাশন শিল্প।

তবে শুধু খনিজ পদার্থ নয়, আমরা যে বন থেকে কাঠ আহরণ করি, এটাও কিন্তু নিষ্কাশন শিল্পেরই অংশ। অর্থাৎ প্রকৃতিতে বিদ্যমান কোনো আকরিক বা জিনিস থেকে যখন আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় উপাদানটি সংগ্রহ করি সেটাই নিষ্কাশন শিল্পের অন্তর্গত। 

দ্বিতীয় স্তরের শিল্প

শিল্প কাকে বলে, শিল্প কত প্রকার ও কি কি

এবার আসা যাক দ্বিতীয় স্তরের শিল্পে। দ্বিতীয় স্তরের শিল্প বলতে মূলত এমন জিনিসগুলোকে বোঝায় যেগুলো প্রকৃতি থেকে গ্রাহকের হাত পর্যন্ত যাওয়ার পূর্বে প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হয়। 

অর্থাৎ প্রাথমিক শিল্পে যেমন আমরা দেখেছি সরাসরি আহরণ করে আমরা জিনিস ব্যবহার করতে পারি, দ্বিতীয় স্তরের শিল্প এমন নয়। বরং তাতে এক ধাপ প্রক্রিয়াকরণ প্রয়োজন হয়।

১. উৎপাদন শিল্প

দ্বিতীয় স্তরের শিল্পের প্রথম ধাপ হলো উৎপাদন শিল্প। এ শিল্পে গ্রাহকের প্রয়োজনীয় জিনিসটি কারখানায় কাঁচামাল থেকে প্রস্তুত করা হয় এবং ঐ কাঁচামালটি আহরণ করা হয় প্রকৃতি থেকে। 

উদাহরণস্বরূপ বস্ত্র কারখানার কথা উল্লেখ করা যাক। কারখানায় প্রথমে প্রকৃতির বিভিন্ন উৎস থেকে সুতা আহরণ করা হয়। যেমন রেশম পোকার গুটি থেকেও সুতা পাওয়া যায়। এবার এই সুতা বস্ত্র উৎপাদনের মেশিনে দেওয়া হয় এবং এর মাধ্যমে বস্ত্র উৎপাদিত হয় যা গ্রাহকের ব্যবহারযোগ্য। এভাবে উৎপাদন শিল্প পরিচালিত হয়। পাট শিল্প, তুলা শিল্প ইত্যাদি সব উৎপাদন শিল্পের অন্তর্গত। 

২. নির্মাণ শিল্প

এভার দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণ শিল্প নিয়ে আলোচনা করা যাক। নির্মাণ শিল্পের অন্তর্গত শিল্প হলো যেগুলো অনেকগুলো কাঁচামালের সমন্বয়ে তৈরি। যেমন, একটি বাড়ি নির্মাণ করতে হলে ইট, বালি, সিমেন্ট ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিসের প্রয়োজন হয় এবং এগুলোর সমন্বয়ে একটি বাড়ি তৈর হয়। 

তবে শুধু বাড়ি নয়, বিভিন্ন ব্রিজ, কালভার্ট, সেতু, রাস্তাঘাট, বিভিন্ন স্থাপনা এসকল কিছুই নির্মাণ শিল্পের অন্তর্গত। 

৩. সেবা পরিবেশন শিল্প

সর্বশেষ ভাগ হলো সেবা পরিবেশন শিল্প। একটি দেশের জনগণের বিভিন্ন সেবার প্রয়োজন হয়, যেমন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, সরবরাহকৃত পানি ইত্যাদি। এসকল সেবা উৎপাদন কেন্দ্র হতে প্রত্যেক গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছানোর ব্যবস্থাকেই সেবার পরিবেশন শিল্প বলে।

ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে 

শিল্প কাকে বলে, শিল্প কত প্রকার ও কি কি

এতক্ষণ আমরা প্রাথমিক ভিত্তিকে শিল্পের বিভিন্ন প্রকার সম্পর্কে জানলাম। এগুলো ছাড়াও ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে অর্থাৎ ঐ শিল্প কার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করেও শিল্পকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। এখন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। 

রাষ্ট্রচালিত শিল্প 

ব্যবস্থাপনার ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাগের প্রথমটি হলো রাষ্ট্র চালিত শিল্প। অর্থাৎ এ শিল্পের মূল চাবিকাঠি থাকে রাষ্ট্রীয় তদারকিতে। যেসকল শিল্প ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাতে অধিক বিনিয়োগ প্রয়োজন সেগুলো যেকোনো একজন ব্যক্তির মালিকানায় পরিচালিত করা কঠিন। 

একারণেই এসকল শিল্পের চালনা করে রাষ্ট্র যার ফলে কোনো প্রতিকূল সময়েও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ঐ শিল্পকে রক্ষা করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিদ্যুৎ শিল্প, বড় বড় সড়ক বা ব্রিজ ইত্যাদি নির্মাণ শিল্প। 

বৃহদায়তন শিল্প 

রাষ্ট্রচালিত শিল্পের থেকে ক্ষুদ্র পরিসর হলো বৃহদায়তন শিল্প। এ শিল্পের মালিকানা রাষ্ট্র এবং কোনো ব্যক্তির যৌথ মালিকানায় থাকতে পারে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মালিকানা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি অথবা একজন ব্যক্তিরও হতে পারে। 

এসকল শিল্পেও ঝুঁকির পরিমাণ বেশি থাকে কেননা এতে উৎপাদনশীলতা বেশি। তবে বড় ব্যবসায়ী যারা তারা এসকল ঝুঁকি সাধারণত মোকাবেলা করার ক্ষমতা রাখেন বলে এগুলো ব্যক্তি মালিকানাধীনও হতে পারে। 

বৃহদায়তন শিল্পের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প। এছাড়াও বিভিন্ন পণ্যের নির্মাণ শিল্পও বৃহদায়তন শিল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

কুটির শিল্প

সর্বশেষ যে শিল্পের প্রকারভেদ নিয়ে আলোচনা করা হবে তা হলো কুটির শিল্প। কুটির শিল্প সাধারণত ক্ষুদ্র আয়তনের শিল্প। এসকল শিল্পে বিনিয়োগ কম এবং উৎপাদনশীলতাও কম। এগুলো একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তির মালিকানাধীন থাকে।

কুটির শিল্পের সাথে জড়িত মানুষের সংখ্যা বর্তমানে অনেকটাই কমে গেছে। তবে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য কুটির শিল্প বেশ ভালো একটি সুযোগ। কারণ এতে ঝুঁকির পরিমাণ খুব কম এবং প্রান্তিক পর্যায় থেকেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। একারণেই তরুণ প্রজন্মের কাছে কুটির শিল্প বেশ ভালো এবং চাহিদাসম্পন্ন একটি দিক।

শ্রমঘন শিল্প কি

শ্রমঘন শিল্প বলতে মূলত ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পকে উল্লেখ করা হয়। অর্থাৎ যেসকল শিল্পে শ্রমের প্রয়োজন বেশি বা শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা বেশি সেগুলোকেই শ্রমঘন শিল্প বলা হয়। 

অন্যান্য শিল্প যেমন সেবা শিল্পতে একটি নির্দিষ্ট সংযোগের মাধ্যমে ঐ সেবা গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। যার ফলে এতে শ্রমের পরিমাণ তেমন উল্লেখ্য নয়। কিন্তু পোশাক শিল্প, বিভিন্ন কুটির শিল্প, কৃষি শিল্প, স্বাস্থ্য সেবা, আহরণ শিল্প ইত্যাদি শিল্পতে প্রচুর পরিমাণ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।

এসকল শ্রমিক প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের নির্ধারিত কার্য সম্পাদন করেন। যার ফলে পণ্য উৎপাদিত হয় এবং এসকল পণ্য গ্রাহকের চাহিদা মেটায়। কায়িক শ্রমের পরিমাণ অতিরিক্ত প্রয়োজন হয় বলেই এগুলোকে শ্রমঘন শিল্প বলে।

আর ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং কুটির শিল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ কম এবং লোকসংখ্যাও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কম হয়ে থাকে। একারণে সেখানে যারা কাজ করেন তাদের শিল্পকে প্রতিষ্ঠিত করতে কায়িক পরিশ্রমের বেশি প্রয়োজন হয়। তাই এ ধরণের শিল্পকে শ্রমঘন শিল্প বলে।

সংযোজন শিল্প কি

সংযোজন শিল্প হলো শিল্পের আরেকটি পর্যায় যেখানে বিভিন্ন শিল্পের সমন্বয় ঘটে। এই শিল্পে মূলত বিভিন্ন নির্মাণ শিল্প বা অন্যান্য শিল্প থেকে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়। এরপর এইসব যন্ত্রপাতি কারখানায় একত্র করে মেশিনের সাহায্যে প্রক্রিয়াকরণ করে নতুন পণ্য তৈরি হয়। 

📌 আরো পড়ুন 👇

উদাহরণস্বরূপ, মোটর বাইকের কথা উল্লেখ করা যাক। বাইক তৈরিকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন স্টিল বা উপাদানের অংশগুলোকে অন্য শিল্প কারখানা থেকে নিজেদের কারখানায় এনে সেগুলোকে সংযোগ করার মাধ্যমে নতুন বাইক তৈরী করে। এভাবেই সংযোজন শিল্পগুলো নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসে।

এরকম আরও শিল্প যেগুলো রয়েছে তা হলো রেল ইঞ্জিন, জাহাজ, কম্পিউটার, টেলিভিশন ইত্যাদি।

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে কোন শিল্প অধিক উপযোগী

আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি এখনো কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু দেশের উন্নতি সাধনের জন্য শিল্পকে প্রধান খাত হিসেবে গড়ে তোলা বর্তমান সময়ে অনিবার্য। তবে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে যেকোনো শিল্প সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বরং ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এক্ষেত্রে অধিক উপযোগী। এর কিছু কারণ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-

  • ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে তুলনামূলক কম বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে যারা তরুণ উদ্যোক্তা আছেন তাদের পুঁজি বৃহৎ শিল্পের জন্য যথাযথ নয়। ফলে সেদিকে আগালে অনেকক্ষেত্রেই তাদের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে যা শিল্পের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিতে পারে।
  • বৃহৎ শিল্প যেমন ইস্পাত শিল্প, প্রযুক্তিগত শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবলের প্রয়োজন যাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন দক্ষ জনবল অধিক পরিমাণে পাওয়া কঠিন। যার ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
  • ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে যেসকল কাজ রয়েছে তাতে অধিক মূল্যের কাঁচামালের প্রয়োজন হয় না। প্রকৃতি থেকেই এসব কাঁচামাল সংগ্রহ করা যায় বলে এতে ঝামেলা তুলনামূলক কম এবং খরচও কম।

মূলত, এসব বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে আমাদের দেশের উপযোগী মনে হয়। তাছাড়াও এক সময় এ শিল্প আমাদের দেশে বেশ প্রসিদ্ধ ছিল। কালের বিবর্তনে তা এখন হারানোর পথে যা আবার ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।

শিল্প সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কাঁচামাল কোথা থেকে নেয়া হয়?

এসকল শিল্পের কাঁচামাল সাধারণত স্থানীয়ভাবে তৈরী হয়। এমন অনেক শিল্প আছে যার কাঁচামাল প্রকৃতিতে রয়েছে। এর জন্য ঐ কাঁচামাল শুধু আহরণ করলেই যথেষ্ট এবং তা সরাসরিভাবে শিল্পে প্রয়োগ করা যায়। এ ধরণের শিল্পে কোনো দামী কাঁচামালের প্রয়োজন হয় না।

শিল্পের প্রধান উদ্দেশ্য কী?

শিল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা। শিল্পভিত্তিক দেশগুলোতে বাইরে থেকে জিনিস আমদানি করার পরিমাণ কম। তাছাড়াও দেশে শিল্প কারখানা বেশি থাকলে তাতে অধিক জনবল প্রয়োজন হয় যার ফলে বেকারত্ব দূর হয়। এতে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ে এবং জীবনযাত্রা আরও উন্নত হয়।

কোন শিল্পকে জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক বলা হয়?

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক বলা হয়। আমাদের দেশে এক সময় মা-বোনেরা সুন্দর নকশী কাঁথা, শীতলপাটি সহ বিভিন্ন শৈল্পিক কাজ করতেন। আর এসব জিনিসের খ্যাতি দেশ ছাড়িয়েই বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছিল। এই শিল্প থেকে বেশ ভালো পরিমাণ রোজগারও করতেন তারা। তাই এই শিল্পকে জাতীয় ঐতিহ্যের প্রতীক ধরা হয়।

শিল্প সম্পর্কে আমাদের মতামত 

শিল্প সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা বিভিন্ন বিষয় জানলাম। শিল্পের প্রকারভেদ এবং আরও কিছু শিল্পের সংজ্ঞা জানলাম যা সম্পর্কে অন্তত মূল ধারণা থাকাও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিল্পের সাথে যারা জড়িত আছেন তাদের জন্য এসব জ্ঞান বিভিন্ন ক্ষেত্রে উপকারী হবে।

পাশাপাশি যারা তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে শিল্পক্ষেত্রে আসতে চাচ্ছেন, তারা কী দিয়ে শুরু করবেন এসব সম্পর্কে ধারণা পেতে চাইলেও শিল্পের জ্ঞান অত্যাবশ্যক। এতে আমাদের শিল্প খাত আরও এগিয়ে যাবে এবং একইসাথে অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হবে।

শিল্প সম্পর্কে আপনাদের আর কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানান। এবং সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এমন আরো শিক্ষামূলক আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

Sharing is Caring

Leave a Comment